স্থান: গ্রামের চায়ের দোকান
গ্রামের চায়ের দোকানে এক দল মানুষ জড়ো হয়েছে। প্রত্যেকের মধ্যে রয়েছে গভীর কৌতূহল এবং অজানা আশঙ্কা। নকুল এবং সহদেবের রহস্যময়ভাবে নিখোঁজ হওয়ার পর, গ্রামের লোকেরা তাদের নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তিত।
রমেশ: (কৌতূহলী) শুনেছো? নকুল আর সহদেব নাকি জঙ্গলের মধ্যে গায়েব হয়ে গেছে। সত্যি বলতে, এমন ঘটনা আগে কখনও শুনিনি। জঙ্গল কি এতটাই ভয়ঙ্কর যে মানুষ চিরতরে হারিয়ে যেতে পারে?
গণেশ: (বিশ্বাস করতে না পেরে) আমি এইসব গল্প শুনে ভাবছি, হয়তো জঙ্গলের ভেতরে কোনো গোপন দরজা আছে যা অন্য জগতে নিয়ে গেছে। কি জানি, এসব কল্পকাহিনীর মতো মনে হচ্ছে না?
গল্পের শোনে গ্রামের লোকেরা মাথা নাড়ে, আর তাঁদের মনের ভেতর তৈরি হয় নানা রহস্যের ছায়া। কেউ কেউ বিশ্বাস করতে শুরু করেছে যে, জঙ্গলের ভেতর প্রকৃতির বাইরে অন্য কোনো শক্তি কাজ করছে।
মিনতি: (অস্থিরভাবে) আমার তো মনে হয়, কোনো পুরনো জাদুবিদ্যা কাজ করছে জঙ্গলের মধ্যে। নকুল আর সহদেব যে ফিরে আসছে না, তার পেছনে কিছু অশুভ শক্তি নিশ্চয়ই কাজ করছে।
প্রকাশ: (কৌতূহল নিয়ে) কল্পনা আর বাস্তবের মধ্যে যদি কোনো মিশ্রণ থাকে, তবে সেটা আমরা বুঝতে পারব না। কিন্তু এর পেছনে হয়তো সত্যি কোনো কারণ আছে, যা আমরা এখনো বুঝতে পারিনি।
গ্রামবাসীরা ভয়ে উদ্বিগ্ন এবং অনিশ্চিত। কিন্তু তাদের মনোযোগ আর কথোপকথন যেন রহস্যের নতুন ধাপ তৈরি করে।
দৃশ্য ১১: নতুন জগতে প্রবেশ
স্থান: জঙ্গলের গভীরে, অচেনা অঞ্চল
নতুন জগতে এসে নকুল এবং সহদেব হাঁটা শুরু করে একটু এগিয়ে গিয়ে তারা এক ভয়ানক ফাঁদে গিয়ে পা রাখে প্রথমে তারা বুঝতে পারেনি তারপর আস্তে আস্তে যখন তারা এই ফাঁদের গভীরে প্রবেশ করতে থাকে তখন তারা বুঝতে পারল যে তারা বিপদে পড়েছে।
তারপর দুই বন্ধু নিজেদের বন্ধুত্বের শক্তি এবং সেই কুঠুরি থেকে পাওয়া কিছু লিপি ব্যবহার করে তারা সেই ফাঁদ থেকে সহজেই বেরিয়ে আসে তারপর তারা জঙ্গলের গভীরে হেঁটে যাচ্ছে। চারপাশে শুধু অজানা পশু-পাখির ডাক। হঠাৎই তাদের সামনে এক বিশাল দরজা দেখা যায়, যা কোনোমতেই স্বাভাবিক বলে মনে হয় না।
নকুল: অনেক বাঁচার বেঁচে গিয়েছি আমরা, কি বলিস সহদেব ?
সহদেব: (স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে) ওফ যা বলেছিস।
(দুই বন্ধু গল্প করতে করতে এগিয়ে যাওয়ার সময় হঠাৎ করে সামনে এক দরজা প্রকট হয়।)
নকুল: (চমকে উঠে) এই দরজা কোথা থেকে এল?
সহদেব: (উদ্বিগ্ন হয়ে) এটা কি কোনো গোপন পথ? আসো, চল এই পথ ধরে দেখি কোথায় নিয়ে যায়!
দুজনে দরজা ঠেলে ভেতরে প্রবেশ করে এবং এক নতুন জগতে পৌঁছে যায়। সেখানে বিভিন্ন ধরনের অদ্ভুত এবং রঙিন পাখি উড়ে বেড়াচ্ছে, অচেনা পশুরা ঘোরাফেরা করছে। তাদের চারপাশের পরিবেশ যেন কল্পনার এক জগৎ তৈরি করেছে।
নকুল: (অবাক হয়ে) এখানে সবকিছু কেমন অদ্ভুত! এই জগতে কেউ কি আগে আসেনি?
সহদেব: (রোমাঞ্চিত) দেখে তো তাই মনে হচ্ছে। এটা যেন আমাদের জন্যই অপেক্ষা করছে!
তারা চারিদিকে তাকায়, যেখানে রঙিন ফুলের গাছ এবং ঝরনা দেখা যাচ্ছে। পশুরা যেন কোনো কথা বলছে, আর পাখিরা গান গাইছে। তারা সামনে এগিয়ে যেতে থাকে এবং আশ্চর্যজনকভাবে একটি গাছের নিচে একটি ছোট্ট গ্রাম দেখতে পায়।
নকুল: (উৎসাহিত হয়ে) এই জায়গাটা কেমন রহস্যময়! এই গ্রামে কেউ থাকে কি?
সহদেব: (উৎসাহী) চল, গ্রামে গিয়ে দেখি। হয়তো কেউ আমাদের এই জায়গার সম্পর্কে বলতে পারবে।
গ্রামে পৌঁছালে, তারা দেখতে পায় কিছু ছোট ছোট মানুষ, যারা দৈত্যাকৃতির ফুলের নিচে বসে আছে। তাদের চেহারা মানুষের মতোই, কিন্তু আকারে অনেক ছোট। তারা হাসছে এবং গল্প করছে। নকুল এবং সহদেব তাদের দিকে এগিয়ে যায়।
নকুল: (শিষ্টাচার নিয়ে) নমস্কার! আমরা এই জায়গার নতুন অতিথি। আপনারা আমাদের এই জায়গা সম্পর্কে কিছু বলতে পারেন?
(একটি ছোট মানুষ সামনে এসে কথা বলা শুরু করে।)
ছোট মানুষ: (হাসিমুখে) আপনাদের স্বাগতম আমাদের জগতে। আমরা এই জায়গার রক্ষক। এখানে প্রকৃতি এবং কল্পনার মিশ্রণে সবকিছু সম্ভব। কিন্তু আপনাদের সতর্ক থাকতে হবে, কারণ এই জগতে অনেক ফাঁদ রয়েছে।
সহদেব: (কৌতূহলী) ফাঁদ? আমরা তো এসেই একটা ফাঁদে পড়ে গিয়েছিলাম। কীভাবে এই জায়গা থেকে সুরক্ষিত থাকা যায়?
(ছোট মানুষটি একটি জাদুকরী পাথর তুলে ধরে।)
ছোট মানুষ: (গম্ভীরভাবে) এই পাথরটি আপনাদের সুরক্ষা দেবে। যেকোনো বিপদের সময় এটি ব্যবহার করবেন। কিন্তু মনে রাখবেন, একে সঠিকভাবে ব্যবহার করতে হবে, নয়তো এটি নিজের ক্ষমতা হারাবে।
নকুল এবং সহদেব পাথরটি গ্রহণ করে এবং ধন্যবাদ জানায়। তারা নতুন জগতে আরও সামনে এগিয়ে যায় এবং দেখতে পায়, বিভিন্ন ধরনের ফাঁদ এবং বাধা রয়েছে, যা তাদের পরীক্ষা করে। তারা সেই পাথরের সাহায্যে সুরক্ষিতভাবে সব বাধা পার হয়ে যায়।
নকুল: (আশাবাদী) এই জগতে অনেক কিছুই শেখার আছে। আমাদের সাহস এবং সতর্কতা এই জগতে টিকে থাকতে সাহায্য করবে।
সহদেব: (দৃঢ়ভাবে) হ্যাঁ, আমরা একসাথে এই রহস্যময় জগৎ আবিষ্কার করব এবং আমাদের গ্রামে ফিরে যাবো।
তারা নতুন জগতে সাহসিকতার সাথে এগিয়ে যায়, এবং প্রতিটি পদক্ষেপে নতুন নতুন অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়। তাদের যাত্রা যেন এক রোমাঞ্চকর অভিযানে পরিণত হয়।
নকুল: (অপলক দৃষ্টিতে) এই জগতে যা কিছু আছে, তা সবই এক অমীমাংসিত রহস্য। আমাদের এই যাত্রা কোনোদিন ভুলব না।
দৃশ্য ১২: নকুলের নোটবুক পাওয়া যায়
স্থান: পুলিশের তদন্ত ঘর
পুলিশ অফিসার একটি ডেস্কে বসে আছেন। তাঁর সামনে নকুলের নোটবুক খোলা। কয়েকটি পাতা উল্টে তিনি এমন কিছু লেখার মুখোমুখি হন, যা গোটা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তোলে।
পুলিশ অফিসার: (নোটবুক পড়তে পড়তে) এখানে লেখা আছে, "জঙ্গলের অতলে লুকিয়ে আছে এক গোপন জগৎ, যেখানে সত্যি ও কল্পনার মধ্যে ফারাক নেই।"
(এই লেখাগুলো যেন একটি রহস্যময় সূত্র। পুলিশের অফিসার মাথা চুলকান। এমন কিছু তাদের সামনে এসেছে, যা যুক্তির বাইরে।)
সহদেবের বাবা: (মনে কৌতূহল নিয়ে) তাহলে কি সত্যিই ওরা অন্য কোনো জগতে চলে গেছে? এই লেখাগুলো কি আমাদের কিছু বলতে চাইছে?
অফিসার একদৃষ্টিতে নোটবুকের পৃষ্ঠার দিকে তাকিয়ে থাকেন। কিছুতেই এই লেখার অর্থ বুঝতে পারছেন না। তবে এটা স্পষ্ট যে, নকুলের মাথায় কোনো রহস্যময় চিন্তা ছিল।
পুলিশ অফিসার: (চিন্তায় ডুবে) জঙ্গলের রহস্য হয়তো এর চেয়ে আরও গভীর। ওরা কি জানত যে, ওরা যে পথে হাঁটছে, তার শেষে এমন কিছু অপেক্ষা করছে?
সহদেবের বাবা: (আশঙ্কায়) এমন হতে পারে যে, তারা সেই রহস্যময় জগতে আটকে গেছে। আমরা কি তাদের ফিরিয়ে আনতে পারব?
(এই প্রশ্নগুলো গ্রামবাসী ও পরিবারের লোকেদের মনে এক গভীর দুশ্চিন্তার জন্ম দেয়। নোটবুকের প্রতিটি শব্দ যেন এক রহস্যময় দুনিয়ার ইঙ্গিত। )
উপসংহার
এই অধ্যায়ের শেষ হয় এক গভীর রহস্যের ইঙ্গিত দিয়ে।
গল্পের পরবর্তী অধ্যায়ে কি এই রহস্যের সমাধান হবে, নাকি আরো জটিলতা সৃষ্টি হবে? জঙ্গলের এই অমীমাংসিত রহস্য কি কখনও উদঘাটন করা যাবে? এই প্রশ্নগুলোর উত্তর খুঁজতে পাঠককে অপেক্ষা করতে হবে।
নকুল এবং সহদেব কি পারবে সেই জগত থেকে বেরিয়ে আসতে? তারা কি পারবে সেই জগতের রহস্য উৎঘাটন করতে?
এই রহস্যময় গল্পে
র জাল যেন ক্রমশ গভীর হচ্ছে, আর নকুল এবং সহদেবের মনে অ্যাডভেঞ্চার ও রহস্যের খিদে পেয়ে বাড়ছে।
অমীমাংসিত রহস্যের সমাধানের জন্য চোখ রাখুন পরবর্তী অধ্যায় !!
No reviews available for this chapter.